আজ সোমবার, ২০শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জে প্রাঙ্ক ভিডিওর নামে চলছে হয়রানি

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের শহর ও শহরতলীতে উঠতি বয়সের তরুণরা দামি মোবাইল কিংবা ডিএসএলআর ক্যামেরা পেলেই প্রাঙ্ক ভিডিও করতে উৎসাহী হয়ে উঠছে। প্রাঙ্ক ভিডিও করে একদিকে ইউটিউবে উপার্জন করা যাচ্ছে অন্যদিকে জনপ্রিয়তার পাওয়া যাচ্ছে । আর জনপ্রিয়তা ও টাকা উপার্জনের নেশায় প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় মানুষকে হয়রানি করছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রাঙ্কের ভিডিওতে মানুষ হয়রানির শিকার হলেও বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে এই সমস্যার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে নিয়ম নীতি মানা হচ্ছেনা বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন এলকাতে প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরিতে হয়রানির নানা তথ্য পওয়া যাচ্ছে। তবে এসব হয়রানির ঘটনার শিকার ব্যক্তিকে যে কোন ভাবে ম্যানেজও করে ফেলছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরণের তেমন কোন হয়রানির খবর পাওয়া যায়নি।

প্রেঙ্কি ভিডিও মানে মজা করার ভিডিও চিত্র। তবে মজা করার নামে অসভ্যতামি ও হয়রানি চলছে। আর এসব প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরিকারী তরুণরা আরেকটি উদ্দেশ্যে এই ভিডিওটি তৈরি করে থাকে। বাণিজ্যিক উদ্দ্যের মধ্যে ইউটিউবে চ্যানেল খুলে টাকা উপার্জনের জন্য এখন তরুণরা এই প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করছে। এছাড়া জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্যও এসব করে আসছে।

জানাগেছে, ‘সমাজের তরুণরা নিজেদেরকে জনপ্রিয় করে তুলতে এসব প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করে থাকে। এর সাথে উপার্জনও করা গেলেতো কোন কথাই নেই। এছাড়া আগে তরুণরা সিনেমা কিংবা নাকটের পর্দায় নিজেদের চেহারা দেখাতে অনেকেই সুযোগ পেলেই চেষ্টা চালিয়ে যেতেন। এখন সেই সুযোগ যদি প্রাঙ্ক ভিডিও বাননোর মধ্য দিয়ে হওয়া যায় তাহলে তো প্রাঙ্ক ভিডিওর প্রতি তরুণরা ঝুকবেই। আর এসব প্রাঙ্ক তৈরির মধ্য দিয়ে জনপ্রিয়তাও অর্জিত হচ্ছে এর সাথে টাকাও উপার্জন হচ্ছে।

তবে প্রাঙ্ক ভিডিও প্রস্তুতকারী তরুণদের অনেকেই প্রাঙ্কের সংজ্ঞা জানে না।এছাড়া এর নিয়ম নীতিও তাদের জানা নেই। যেকারণে প্রাঙ্কের মত ভিডিও তৈরি করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে জনপ্রিয়তা কিংবা টাকা উপার্জনের নেশায় মেতে উঠেছে। এতে করে সমাজের মানুষজন কখনো বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে আবার কখনো হয়রানির শিকার হচ্ছে। এদিকে প্রাঙ্ক প্রস্তুতকারী তরুণরা তারুণ্যের উদ্দিপনায় নানা রকম ভিডিও চিত্র ক্যামেরায় ধারণ করছে। ্তারা যে মানুষদেরকে হয়রানি করছে এতে তাদের কোন অনুসূচনা তো নেই বরং উল্টো তারা এসব করে ভীষণ মজা পাচ্ছে।

সম্প্রতি শহরের বিভিন্ন স্থানে এভাবেই প্রাঙ্ক ভিডিও করে মানুষকে হয়রানি করে পরে ক্যামেরা দেখিয়ে ভুক্তভোগিকে বলছে, এটা আসলে প্রাঙ্ক ভিডিও। এতে করে অনেক ভুক্তভোগী ক্ষান্ত হলেও অনেকেই এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ করছে। তবে এসব প্রতিবাদকে হেলায় উড়িয়ে দিয়ে প্রাঙ্ক প্রস্তুতকারী তরুণরা দিব্যি ভিডিও করে যাচ্ছে।

এসব ভিডিওতে রাস্তার পাশে থাকা পাগল এসে হঠাৎ আপনার কাছে এসে হাজির হয়ে আপনার গায়ে ময়লা লেপ্টে দিতে চাইলে অনেকে মেয়েরাই ভয়ে চিৎকার করে উঠে। আর তখনই তাদের সহয়োগিরা কাছে এসে ক্যামেরা দেখিয়ে বলে আপু এটা প্রাঙ্ক ভিডিও ভয় পাবেনা। অথচ তারা ইতোমধ্যে ভয় দেখিয়ে মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ভিডিও করে মজা নিচ্ছে। আর সেই মজার ভিডিও দিয়ে ব্যবসা করে টাকা উপার্জন করে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।

এতে ভুক্তভোগিরা বলছে, ‘যারা এসব প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করছে তারা আসলে বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ। এছাড়া এসব তাদের মাঝে এক ধরণের নেশার মত কাজ করে। এই নেশার কারণেই তারা মানুষকে ব্যবহার করে ভিডিও তৈরি করে থাকে। এসব কুরুচীপুর্ণ চিন্তা ধারর মানুষেরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে এসব ফালতু কাজ করে বেড়ায়।’

এদিকে প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি কারীরা বলছেন, ‘সবাই এক না। আর যারা প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করবে তাদেরকে অবশ্যই মানুষের হয়রানি বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে। তবে অনেক তরুণ আছে যারা অতি উৎসাহি হয়ে ভিডিওর নামে মানুষকে হয়রানি করে থাকে। তবে এসব হয়রানি মূলক প্রাঙ্ক ভিডিও বন্ধ করে দেয়া দরকার। এবং এর জন্য নিয়ম নীতি থাকাটা দরকার। আর হয়রানিকারীদের আইনের আওতায় আনা দরকার।’

তবে খুব শিঘ্রই প্রাঙ্কের নামে এসব হয়রানি বন্ধ না হলে আগামীতে ভবিষ্যত পরিণতি খুব খারাপ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। আর এসব দমনে পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সমাজের সকল মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আর হয়রানির অপরাধ ছোট বলে অগ্রাহ্য করে অনেকে পিছু হাটে। এসব না করে ছোট বড় সকল প্রকার অপরাধকে দমন করার প্রবনতা তৈরি করতে হবে।